কালের আবর্তে হারাতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর

কালের আবর্তে হারাতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর

শেখ শফিউল আলম লুলু,ঝিনাইদহ;
কালের আবর্তে হারাতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর। এক সময়ে গ্রাম বাংলার প্রতিটি জনপদে মাটির ঘর ছাড়া কোন বসতভিটা চোখে পড়ত না। তখন গ্রাম বাংলার মানুষ মাটির তৈরি ঘর ছিল বসবাসের উপযুক্ত আবাস। আধুনিকতার ছোয়ায় আজ গ্রাম বাংলার সেই মাটির ঘর হারাতে বসেছে। মানুষের মধ্যে লেগেছে প্রযুক্তির ছোয়া। ফলে মাটির ঘরের জায়গায় দখল করে নিয়েছে ইটের বাড়ি, টিনের বাড়ি, কাঠের বাড়ি। মাটির ঘরে বসবাসকারি বাবু পরিতোষ কুমার জানালেন, তার পিতা আজ থেকে ৪০ বছর আগে মাটির ঘর তৈরি করে ছিল। সেই ঘরে আমরা এখনও বসবাস করে আসছি। মাটির ঘরের ওপরে ছাউনি দেওয়া হত খড়, বিচালি, আখের পাতা দিয়ে চালা দেওয়া হতো। ৪ থেকে ৫ বছর পর পর চালা গুলোপরিবর্তন করা হতো। কথা হয় মাটির ঘর তৈরির কারিগর (কোরা) সামছুল আলম জানালেন, আজ থেকে আবহমানকাল হতে গ্রাম বাংলায় বংশ পরম্পরায় মাটির ঘর চলে আসছে। তখন দশ থেকে পনের জন মিলে পালাক্রমে মাটির ঘর তৈরি করা হতো। প্রথম দিকে এটেল মাটি দিয়ে ভিজিয়ে কাদা করে এক হাত উচু করে মাটি গাথা হয়। মাটি শোকানোর পর এক সপ্তাহ পরে আবার এক হাত করে পর্যায়ক্রমে ঘরের মাটি গাথা হতো। তখন ঐ ঘর তৈরি করতে বন্দ হিসাবে মুজুরি নেওয়া হতো। গ্রামের প্রতিটি পরিবারেই এই মাটির ঘরের প্রচলন ছিল। কালীগঞ্জ উপজেলার রায় গ্রামের অমিত মুখার্জী জানালেন, গ্রাম বাংলার প্রতিটি পরিবারে থাকত মাটির ঘরে। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে এসেছে ঘর তৈরিতে আধুনিকতার ছোয়া। এসছে মানুষের অর্থনৈতিক উননতির পথে। ফলে এখন মাটির ঘরের পরিবর্তে ইটের বাড়ি, টিনের ঘর ও কাঠের ঘর প্রচলিত হচ্ছে। ফলে কালের আবর্তে দিনে দিনে মাটির ঘর গ্রাম বাংলায় আর চোখে পড়ে না।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন